লেবু চায়ের উপকারিতা - লেবু চায়ের গুনাগুন - lebu cha
আপনি কি জানেন লেবু চা আপনার শরীরের জন্য উপকারী নাকি ক্ষতিকর?? আর উপকারী হলেও
তা কতটুকু?আর ক্ষতি বা কতটুকু?লেবু চা কি প্রতিদিন পান করা যাবে?লেবু চা খেলে কি
হয়? লেবু চায়ের ব্যাপারে এ সকল বিষয়বস্তু আলোচনা করা হয়েছে এই প্রতিবেদনের
মধ্যে।আপনারা যদি লেবু চা সম্পর্কে সকল বিষয়বস্তু জানতে চান তাহলে এই প্রতিবেদনটি
আপনার জন্য।মনযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
প্রতিটা জিনিসের সুফল এবং কুফল দুই রয়েছে। পনাদেরকে অবগত করার উদ্দেশ্যে জানিয়ে
রখি লেবু চায়ের গুণাগুন রয়েছে অনেক, কিন্তু কিছু অপকারীতাও রয়েছে।এই একটি
প্রতিব্দনের মধ্যেই আপনি জেনে যাবেন লেবু চা পান করার উপকারীতা এবং অপকারীতা
সম্পর্কে।চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যায়।
পেইজ সূচিপত্রঃ লেবু চায়ের উপকারিতা - লেবু চায়ের গুনাগুন - lebu cha
- লেবু চায়ের উপকারিতা
- লেবু চায়ের গুনাগুন
- প্রতিদিন লেবু চা পান করা যাবে কি জানুন
- লেবু চা বানানোর পদ্ধ্যতি
- লেবু চায়ের অপকারিতা
লেবু চায়ের উপকারিতা
লেবু চায়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে।লেবু চা ক্যান্সারের মতো রোগ প্রতিরোধ করতে
সাহায্য করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে লেবু চা খুব ভালো ভূমিকা পালন করে থাকে।
যেহেতু আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন মূলত লেবু চা এর উপকারিতা সম্পর্কে।
এজন্য লেবু চা পান করলে আপনি কি কি উপকার পেতে পারেন জানিয়ে দেবো সে
সম্পর্কে। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে লেবু চা এর উপকারিতা গুলো জেনে নেওয়া
যাক।
বন্ধুরা আমাদের দেশে ৯৯% মানুষ ছোট বড় বয়স্ক নর নারী সকলে চা পান করে
থাকে। যারা নিয়মিত চা পানে অভ্যস্ত তাদের জন্য চা শরীরকে কর্মক্ষম
করে তোলার ঔষধ হিসেবে কাজ করে। অনেকেই আছে যারা ঘুম থেকে উঠেই চা পান করে।
এ ধরনের আসক্ত ব্যক্তিদের চায়ের চুমুক না দিলে দিন শুরু হয় না। সকল
পরিস্থিতিতে এক কাপ চা মানসিক শান্তির ঔষধ। সকল অলসতা কাটানোর ঔষধ এক কাপ
চা।
প্রতিদিন পান করা এই অতি প্রয়োজনীয় পানীয়র রয়েছে নানা রকম
বৈচিত্র্যতা।ঠিক যেমন মানুষের পছন্দের মধ্যে বৈচিত্রতা রয়েছে ঠিক তেমনি
একেক জনের পছন্দ অনুযায়ী চায়ের মধ্যে বৈচিত্র্যতা রয়েছে। কেউ দুধ চায়ে
অভ্যস্ত। কেউ আবার আদা দিয়ে লিকার চায়ে অভ্যস্ত। কেউ আবার লেবু চায়ে
অভ্যস্ত। আমাদের আজকের প্রতিবেদনের আলোচনা হচ্ছে লেবু চা নিয়ে। আমরা সবাই
তো চা পান করে থাকি। তবে লেবু চায়ের একটি অন্যরকম উপকারিতা রয়েছে।
প্রতিদিন এক কাপ লেবু চা পান করলে আপনি যে সকল উপকারগুলো পাবেন নিচে
সে সম্পর্কে জানানো হলো।
গবেষকদের মধ্যে লেবুর চাপ পান করলে শরীরে অনেক প্রয়োজনীয় নিউট্রিশন
পাওয়া যায়। যেমন ধরুন লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি, ফসফরাস, পটাশিয়াম,
ফোলেট ও লিউটিনের মতো উপাদান যা শরীরকে সুস্থ রাখতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা
পালন করে থাকে।
এছাড়াও লেবুতে সাইট্রিক অ্যাসিড রয়েছে। লেবুতে থাকা সাইট্রিক এসিড
কিডনিতে পাথর দূর করতে সাহায্য করে। শরীরকে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস গ্রহণ করতে
সাহায্য করে। আপনাকে আপনার শরীরের ইমিউন সিস্টেমে বৃদ্ধি ঘটাতে হবে
লেবু চায়ের গুনাগুন
প্রতিদিন লেবু চা পান করা যাবে কি জানুন
লেবু চা বানানোর পদ্ধ্যতি
প্রতিবাদের এই অংশে এসে আমরা আপনাদেরকে লেবু চা কিভাবে বানাবেন সেই পদ্ধতি
শিখিয়ে দেব। লেবু চা বানানো খুবই সহজ একটি প্রক্রিয়া। বন্ধুরা চা এমন
একটি স্বাগতিক পানীয় যা সবাই সুস্বাদু ভাবে বানাতে পারে না। তবে
যেই চা বানাতে পারদর্শী স্বাভাবিকভাবেই সবার কাছে তার
প্রাধান্যতাও বেশি। চা বানানো অত্যন্ত সহজ একটি কাজ। তবে এই সহজ কাজটি সবার
দ্বারা হয় না। হ্যাঁ আপনি ঠিকই শুনেছেন। চা সবাই সুস্বাদু ভাবে বানাতে
পারে না।
তবে আপনি যদি চেষ্টার মাধ্যমে সুস্বাদুভাবে চা বানানো শিখে ফেলতে পারেন
তাহলে লোকমুখে আপনার একটি আলাদা প্রাধান্যতা বৃদ্ধি পাবে। চলুন তাহলে আর
কথা না বাড়িয়ে আপনাদেরকে লেবু চা বানানোর পদ্ধতি সম্পর্কে জানিয়ে
দেয়।
লেবু চা বানানো অত্যন্ত সহজ একটি প্রক্রিয়া। এর জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম
বাজার থেকে ভালো মানের লেবু সংগ্রহ করতে হবে। এই লেবুর আকার
গোলাকৃতির অথবা লম্বা আকৃতির হতে পারে। তবে খেয়াল রাখবেন লেবু যেন সবুজ
রঙের হয়। কারণ সবুজ সতেজ লেবুর সুগন্ধি বেশি এবং স্বাদেও অতুলনীয়
হয়। এক্ষেত্রে আপনি যদি হলদে রং এর পাকা লেবুগুলো সংগ্রহ করেন তাহলে
আপনার চায়ের মান নষ্ট হতে পারে। আর হ্যাঁ বাজারে গেলে আপনি বড়
সাইজের লেবুগুলো দেখতে পাবেন। আঞ্চলিক ভাষায় এই লেবুকে ঘোরালেবু বলা হয়।
অনেকে আবার শরবতী লেবু হিসেবে চিনে থাকে।
তবে চা বানানোর জন্য ভাত দিয়ে খাওয়ার লেবু অর্থাৎ আঞ্চলিক ভাষায় যেটাকে
কাগজি লেবু বলা হয় এই লেবুটি ব্যবহার করা যাবে না। আমাদের দেশে দুই
ধরনের লেবু পাওয়া যায় একটি হচ্ছে ভাতের লেবু অর্থাৎ যেটি ভাতের
সঙ্গে খেতে হয় আর অন্যটি হচ্ছে শরবতের লেবু যে লেবু দিয়ে চা অথবা
শরবত বানানো হয়। আপনি দেখলেই চিনতে পারবেন শরবতের লেবুর সুগন্ধি অনেক। আপনার
চিনতে সমস্যা হলে সবজিওয়ালাকে বলবেন যে ভাই শরবতের লেবু দেন।
এতক্ষণ আপনাকে লেবু চালানো হলো এবার আপনাকে ভালো মানের চা পাতি সংগ্রহ করতে
হবে। এর জন্য আপনি যে কোন ভালো কোম্পানির চায়ের পাতি ব্যবহার
করতে পারেন। আরেকটি উপকরণ লাগবে সেটি হচ্ছে চিনি। এবং পাতি ছাকার
জন্য একটি ছাকনা ব্যবহার করুন। মিহি নেটের ছাকনা আপনি বাজারে ১০
থেকে ১৫ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।
এবার একটি কাপের মধ্যে যতটুকু পরিমাণ চা বানাতে চাচ্ছেন ঠিক সেই অনুযায়ী চিনি
নিন। এবং একটি লেবুর অর্ধেক অংশ সম্পূর্ণ চিপে কাপের মধ্যে রসটুকু সংগ্রহ
করুন। মনে রাখতে হবে লেবু চা বানানোর জন্য একটি লেবুর অর্ধেক অংশ
সম্পূর্ণটাই প্রয়োজন। এবার কাপের মধ্যে লেবুর রস এবং চিনি সংগ্রহ করা হয়ে
গেলে এর মধ্যে সামান্য পরিমাণে বিট লবণ দিতে হবে।
এরপর যতটুকু পরিমাণ চা বানাবেন সেই অনুযায়ী চাকনার মধ্যে পাতি সংগ্রহ করুন।
সর্বশেষ ধাপ কাপের ঠিক উপরে ছাকনা ধরুন এবং অতিরিক্ত পরিমাণে
গরম পানি ছানার মধ্যে ধীরে ধীরে ঢালতে থাকুন। এতে করে আপনার পাতি ছাকনার
মধ্যেই রয়ে যাবে কিন্তু অরিজিনাল চা আপনার কাপের মধ্যে সংগ্রহ হবে। এভাবে
আপনার প্রয়োজন মত ঢালুন। একটি কথা মনে রাখবেন লেবু চা বানানোর জন্য অল্প
পরিমাণে চাপাতির প্রয়োজন পড়ে। এর জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে পাতি সংগ্রহ করবেন
না।
এবং সর্বশেষ চা পাতি ঢেলে কাপ পরিপূর্ণ হলে একটি চামচ দিয়ে ভালোভাবে ঘুটে
নিন। এবং এক্সট্রা ভাবে সৌন্দর্যতা ও ফ্লেভার বাড়ানোর জন্য দুই একটি পুদিনা
পাতা এর মধ্যে ফেলে দিতে পারেন। পুদিনা পাতা আপনার চায়ের মধ্যে অন্যরকম একটি
সৌন্দর্যতা এনে দেবে এবং এর সাথে একটি নতুন ফ্লেভার যোগ করবে। ব্যাস তৈরি
হয়ে গেছে আপনার কাঙ্খিত লেবু চা।
লেবু চায়ের অপকারিতা
প্রতিবেদনের এই অংশে আমরা লেবু চায়ের কিছু অপকারীতা সম্পর্কে জানবো।লেবু চায়ের
কিছু অপকারীতা রয়েছে যেগুলো সবারই জেনে রাখা উচিত।কারন চায়ে আসক্ত ব্যাক্তিরা
দিনে প্রচুর চা পান করে থাকে।কেউ আসক্ত দুধ চায়ে,কেউ আবার লাল চায়ে, কেউ আবার
লেবু চায়ে। আমাদের দেশে অনেক ধরনের চাওয়া পাওয়া যায়। আমাদের দেশে এত ধরনের চাপ
পাওয়া যায় যে সেগুলোর প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা নাম উল্লেখ করে বলা সম্ভব
নয়। আমাদের এই বৈচিত্রময় দেশে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন রকম পছন্দ রয়েছে। আর
যেহেতু বাংলাদেশের ৯৯% লোক চা প্রিয় মানুষ। বাঙালির ছাড়া একদিনও কাটেনা।
যেহেতু আপনাদেরকে ইতিপূর্বে জানিয়ে দিয়েছে আমাদের দেশে ৯৯% লোক চা পান করে
থাকে। এদের মধ্যে অনেকে আছে যারা নিয়মিত লেবু চা পান করে থাকে। চা পানে
আসক্ত ব্যক্তির চায়ে চুমুক না দিলে কোন কাজে মন বসে না। যেহেতু যে সকল
ব্যক্তিরা লেবু চা পান করে থাকে তাদের জন্য লেবু চা সম্পর্কে আজকের এই
প্রতিবেদন। অতএব সে সকল লোকদের লেবু চা পান করার ফলে কোন ধরনের অসুবিধা অথবা
ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে কিনা তা জানিয়ে দেবো প্রতিবেদনের এই অংশে।
সর্বপ্রথম আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি অতিরিক্ত পরিমাণে লেবু চা পান করা পুষ্টিবিদদের
মতে উচিত নয়। অতিরিক্ত পরিমাণে লেবু চা খেলে যেসব ক্ষতি গুলো হওয়ার সম্ভাবনা
রয়েছে তা জেনে নিন।
অতিরিক্ত লেবু চা পান করার ফলে আপনার দাঁতের এনামেল এর ক্ষতি হতে পারে। এতে
করে আপনার দাঁত ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য আপনাকে লেবু চা খাওয়ার পর
ভালোভাবে কুলি-কুচি করে ফেলতে হবে।
গবেষকদের মধ্যে অতিরিক্ত লেবু চা পান করার ফলে আপনার অন্ত্রের পি
এইচ এর স্বাভাবিক মাত্রায় বিঘ্ন ঘটে। এটা আপনার বদহজমের কারণ হয়ে দাঁড়াতে
পারে। অতিরিক্ত লেবু চা পান করার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অতিরিক্ত লেবু চা পান করলে যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তাদের বমি বমি
ভাব দেখা দিতে পারে। পেট ব্যথা সহ গ্যাস্ট্রিক আলসারের সমস্যা এমনকি পাতলা
পায়খানা হতে পারে।
আপনার লক্ষ্য করলে দেখবেন শীতকাল আসলে অতিরিক্ত ঘন ঘন প্রশ্রাব পায়। কিন্তু
অনেকে আছে এর তুলনায় কম পানি পান করে থাকে এজন্য শীতকালে প্রাই
মানুষেরই ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা দেয়। আর যেহেতু আপনার ইতিপূর্বে
জেনেছেন লেবু চা মূত্রবর্ধক হিসাবে কাজ করে থাকে। এজন্য বলা হচ্ছে
বিশেষ করে শীতকালে অতিরিক্ত পরিমাণ লেবু চা পান করলে ডিহাইড্রেশন এর ঝুঁকি
থাকে।
গবেষকদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য লেবু চা পান করা একেবারে নিরাপদ নয়।
কারণ এতে ক্যাফেইন রয়েছে। আর শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাফেইন প্রবেশ করলে
গর্ভপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তো রয়েছেই।
গবেষকদের মতে অতিরিক্ত পরিমাণে লেবু চা পান করলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ
ক্যালসিয়াম মূত্রের সাথে বের হয়ে যায়। যা অস্টিওপোরোসিসের মতো সমস্যার
সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য গবেষকদের মধ্যে অতিরিক্ত পরিমাণে লেবু চা পান করা
একেবারে উচিত নয়।
পোষ্ট পড়ে আমাদেরকে আপনার মূল্যবান মন্তব্য লিখুন। আপনাদের প্রতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়
comment url