আশুরার দিনে করণীয় কাজগুলো - আশুরার দিনে বর্জনীয় কাজগুলো - আশুরার শিক্ষা
আস্সালামু আলাইকুম সুপ্রিয়ো পাঠকবৃন্দ। এখানে আলোচনা করা হবে আশুরার
দিনে করণীয় কাজগুলো, আশুরার দিনে বর্জনীয় কাজগুলো আরো থাকবে আশুরার শিক্ষা
সম্পর্কে বিস্তারিত।আশুরার দিনে করণীয় কাজগুলো আমাদের সকলের জেনে রাখা উচিত। আসুন
আর কথা না বাড়িয়ে আশুরার দিনে করণীয় কাজগুলো - আশুরার দিনে বর্জনীয়
কাজগুলো সাথে আশুরার শিক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক👇👇
আশুরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক দিবস। আশুরার দিনে করণীয় কাজগুলোর
মধ্যে কিছু আমল রয়েছে। ইসলামে আশুরার দিবসে বহু তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাবলি
রয়েছে। মহান আল্লাহ পাকের কুদরতি ইশারায় ইসলামের অনেক ঐতিহাসিক ঘটনাবলী আঞ্জাম
পেয়েছে এই আশুরার দিবসে।
অতএব আশুরার বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে হবে। সুতরাং আশুরার দিনে
করণীয় কাজগুলো - আশুরার দিনে বর্জনীয় কাজগুলো সাথে আশুরার শিক্ষা সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে পুরো প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।👇
পেইজ সূচিপত্রঃ-আশুরার দিনে করণীয় কাজগুলো - আশুরার দিনে বর্জনীয় কাজগুলো - আশুরার শিক্ষা
আশুরার দিনে করণীয় কাজগুলো
আশুরার দিনে করণীয় কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে পবিত্র আশুরার দিবস
উপলক্ষে সকল মুমিনের উচিত অন্তরে ঈমানী চেতনা কে পুনরুদ্ধার করা।পবিত্র
আশুরার দিবসে অতীতের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনাবলী কে স্মরণ করে বেশি বেশি
ইস্তেগফার করা।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণীত রাসূল (সাঃ) বলেন রমজান মাসের
রোজার পর আল্লাহর পবিত্র মাস মহরমের রোজাই হলো শ্রেষ্ঠ রোজা তিনি আরও বলেন ফরজ
নামাজের পরে রাতের নামাজই হলো শ্রেষ্ঠ নামাজ। (মুসলিম, মেশকাত-১৯৪১)
আশুরার দিনে করণীয় কাজগুলোর মধ্যে আশুরার দিনে সবথেকে বড় আমল হচ্ছে রোজা
রাখা। কারণ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন
"তোমরা আশুরার দিনে রোজা রাখো। তিনি আরো বলেন তোমরা আশুরার পূর্বে অথবা
পরের একদিন সহ রোজা রাখবে" (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নাম্বার ২৪১)
আশুরার দিনে করণীয় কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে পবিত্র আশুরার দিবসে সওম রাখা।
স্বয়ং হুজুরে পাক (সাঃ) এই দিনে রোজা রাখতেন।এবং সাহাবিদেরকেও রোজা রাখার
ব্যাপারে নির্দেশ দেন।আশুরার দিনে রোজা রাখার আমলের ব্যাপারে বিস্তারিত পড়তে
নিচের কালো দাগের মধ্যে চাপ দিন।
আশুরার দিনে করণীয় কাজগুলোর মধ্যে আরেকটি কাজ হচ্ছে আশুরার দিবসে যে সকল
মানুষ সওম রেখেছে তাদেরকে ইফতার করানো।রোজা রাখার মাধ্যমে বান্দা পরিপূর্ণ
ভাবে আল্লাহ্র কাছে আনুগত্য প্রকাশ করে। রোজাদারকে ইফতার করালে আল্লাহ খুশি
হয়।
আশুরার দিনে করণীয় কাজগুলোর মধ্যে একটি বড় করণীয় হচ্ছে বেশি বেশি ইস্তেগফার
করা। এই বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ
করেছেন
"মহরম মাস মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের কাছে একটি মর্যাদা পূর্ণ মাস। এই
মাসে এমন একটি দিন আছে, যেখানে মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন অতীতের
একটি সম্প্রদায়কে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। এবং ভবিষ্যৎ সম্প্রদায়- কেও ক্ষমা
করবেন" ইনশাআল্লাহ। (তিরমিজি শরিফ-৭৪১)
আশুরার দিবসের অতীতের ঐতিহাসিক ইতিহাস গুলো স্মরণ করে ত্যাগের
শিক্ষা গ্রহণ করা কোরবানির প্রকৃত অর্থ বোঝার চেষ্টা করা।
আশুরার দিনে বর্জনীয় কাজগুলো
আশুরা কে কেন্দ্র করে একদল মুসলিম বিভিন্ন বর্জনীয় কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে।
আমাদের দেশে আশুরার দিনে আশুরাকে ঘিরে যে কর্মকাণ্ডগুলো হয়ে থাকে ইসলামের
দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলো করা জায়েজ নয়।
আশুরার দিন হযরত ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু কে স্মরণ করার উদ্দেশ্যে বিশাল
একটি নকল কবর বানানো হয়। অতঃপর বিশাল মিছিল বের করে সে কবর বিভিন্ন
জায়গায় প্রদর্শন করা হয়। এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে
আশুরার দিনকে কেন্দ্র করে মিছিল করা হয় এবং মাথায় কালো কাপড় বেঁধে দলে
দলে মানুষ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বেড়ায়। এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে
হবে।
প্রতিবছর আশুরার দিনকে কেন্দ্র করে একদল মুসলমান নকল তাজিয়া বের করে। এসব নকল
তাজিয়া কে কেন্দ্র করে মানুষ বিভিন্ন প্রকার অঙ্গভঙ্গি করে সম্মান
জানায় এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে
এসব তাজিয়াকে কেন্দ্র করে মানুষ নজরানা স্বরূপ টাকা-পয়সা দান করে থাকে। এ
ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
আশুরার দিবসকে কেন্দ্র করে একদল মানুষ বের হয় যারা ধারালো অস্ত্র দ্বারা
নিজেদের শরীরে আঘাত করতে থাকে এ ধরনের রক্তপাত ঘটানো থেকে বিরত
থাকা।
আশুরার দিবসকে কেন্দ্র করে অনেকেই শোকে লিপ্ত হয়। সেদিন কালো পোশাক
পরে মাথায় কালো কাপড় বেঁধে তারা শোক পালন করে। সেদিন তারা নিজেকে
বিভিন্ন ভাবে কষ্ট দিয়ে থাকে।
আশুরার দিবসকে কেন্দ্র করে কোন প্রকার শোক অথবা মাতম করা হতে বিরত থাকা।
আশুরার দিবসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলায়
বিভিন্ন ধরনের সার্কাস বা জাদু খেলা প্রদর্শন করা হয়। ইতিহাসের বিভিন্ন
ঘটনাবলির প্রেক্ষাপট নকল করে প্রদর্শন করা হয়। এ ধরনের কাজ থেকে বিরত
থাকতে হবে
আশুরার দিনে এক দল লোক হাই হোসেন এবং হায় আলী বলে নিজেদের বুকে আঘাত
করতে থাকে। এবং বিলাপ করতে থাকে। এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে
আশুরার দিনে বিশাল একটি নকল কবর বানানো হয় এবং সেই খবরটিকে বিভিন্ন ধরনের
ফুলের মালা এবং ফুল দিয়ে সাজানো হয়। এবং ঢাক ঢোল বাজিয়ে অনেক লোকজনের
সমাগম মিলে তাজিয়া বের করা হয়। এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে
আশুরার দিবসকে কেন্দ্র করে হযরত ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু কে উপসর্গ করে
ছোট বাচ্চাদেরকে ভিক্ষুক বানানো হয় এবং ভিক্ষা করানো হয়। এই কাজের মাধ্যমে
নাকি ঐ বাচ্চার আয়ুষ্কাল অনেক দীর্ঘ হবে।এ ধরনের মনোভাব পোষণ করা থেকে বিরত
থাকা।
আশুরার দিনকে কেন্দ্র করে শোক পালনের উদ্দেশ্যে নির্ধারিত কনো রঙের পোশাক পরা
থেকে বিরত থাকতে হবে।
আশুরার দিবসকে কেন্দ্র করে পূর্ববর্তী আয়োজন এবং প্রচার-প্রচারণা থেকে বিরত
থাকতে হবে।
অনেক মানুষ আছে যারা আশুরা দিন বিয়ে করাকে অমঙ্গলজনক মনে করে। মনে এরকম ধারণা
পোষণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
আশুরার শিক্ষা
আশুরা থেকে আমাদের অনেক কিছু শিখার আছে। ইসলামে অনেক প্রাগ-ঐতিহাসিক
ঘটনাবলি সংঘটিত হয়েছিল এই পবিত্র আশুরার দিবসে।আশুরা আমাদেরকে শিক্ষা দেয়
কিভাবে ফেরাউনের হাত থেকে হজরত মূসা আলায়হিস সালামকে আল্লাহ পাক রক্ষা
করেছিলেন।
নিশ্চয় আল্লাহ্ একমাত্র রক্ষাকারী।আশুরা আমাদেরকে শিক্ষা দেয় কারবালার
যুদ্ধে হজরত ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর আত্নত্যাগ। অন্যায় ও জুলুমের
বিরুদ্ধে ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর আপোষহীন মনোভাব পুরো উম্মতে
মুহাম্মাদীর জন্য শিক্ষা।
আশুরার দিবসে কারবালার ময়দানে ঘটে যাওয়া মুসলিম ইতিহাসে সবথেকে নির্মম ঘটনা
থেকে আমাদেরকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।সবসময় মনে রাখতে হবে একজন প্রকৃত
মুসলমানের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে তার মজবুত ঈমান।
সকল মুসলীম জাতীকে ঈমানী চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।কারবালার প্রান্তরে ঘটে যাওয়া
হজরত হোসাঈন রাদিয়াল্লাহু আনহুর সপরিবারে আত্নত্যাগ সমগ্র বিশ্ব বাসির জন্য
শিক্ষা, যে আল্লাহ্র পথে টল থাকতে মুসলমান তার জীবন দিতে দিধাগ্রস্থ হবে না।
হজরত ইমাম হোসাঈন রাদিয়াল্লাহু আনহু আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়ে গেছেন, যে মস্তক
আল্লাহর কাছে নত হয়েছে সে মস্তক কখনো জালিমে কাছে নত হতে পারে না। অতএব হকের
পথে থেকে মৃত্যুকে বরণ করে নিতে হবে।
পোষ্ট পড়ে আমাদেরকে আপনার মূল্যবান মন্তব্য লিখুন। আপনাদের প্রতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়
comment url